১. বাংলা সন কী?
বাংলা সন বা বাংলা সাল হলো বাঙালি জাতির নিজস্ব সৌরভিত্তিক বর্ষপঞ্জি। এটি মূলত কৃষিনির্ভর সমাজের উপযোগী হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে ঋতু ও খাজনা আদায়ের সুবিধা হয়।
২. সূচনা: আকবরের অবদান
বাংলা সনের প্রবর্তক ছিলেন মোগল সম্রাট আকবর।
১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ‘তারিখ-ই-এলাহি’ নামে নতুন সন চালু করা হয়, গণনা শুরু হয় আকবরের সিংহাসনে আরোহনের বছর ১৫৫৬ সাল থেকে।
এটি হিজরি চান্দ্র বর্ষ ও বাংলা সৌর পঞ্জিকার মিলনসূত্রে তৈরি।
৩. কেন প্রয়োজন হয়েছিল নতুন সন?
হিজরি চান্দ্র পঞ্জিকা অনুযায়ী খাজনা আদায়ের তারিখ পরিবর্তিত হতো।
কৃষিভিত্তিক সমাজে তা ছিল অসুবিধাজনক।
তাই বছরের ঋতুভিত্তিক ধারাবাহিকতা রাখতে নতুন বর্ষপঞ্জি প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
৪. আধুনিক রূপান্তর ও ব্যবহার
বাংলাদেশে ১৯৬৬ সালে বাংলা সনে সংস্কার আনা হয়।
১৯৮৭ সাল থেকে পহেলা বৈশাখ সরকারিভাবে ছুটি ও জাতীয় উৎসব হিসেবে পালিত হয়।
বর্তমানে বাংলা সন সৌর পঞ্জিকা অনুসরণ করে এবং আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
৫. বাংলা সনের ১২ মাস
১. বৈশাখ
২. জ্যৈষ্ঠ
৩. আষাঢ়
৪. শ্রাবণ
৫. ভাদ্র
৬. আশ্বিন
৭. কার্তিক
৮. অগ্রহায়ণ
৯. পৌষ
১০. মাঘ
১১. ফাল্গুন
১২. চৈত্র
(প্রথম ৬ মাস ৩১ দিন করে, শেষ ৬ মাস ৩০ দিন করে। অধিবর্ষে ফাল্গুনে ৩১ দিন হয়।)
৬. বাংলা সনের সাংস্কৃতিক প্রভাব
পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব।
হালখাতা, আনন্দ শোভাযাত্রা, বৈশাখীমেলা,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সব মিলিয়ে এক ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক আবহ।
এটি শুধু একটি ক্যালেন্ডার নয়, বরং বাঙালির আত্ম পরিচয়ের প্রতীক।
শুভ নববর্ষ!
‘মোরা বাঙালী’ পরিচয়ে গর্বিত হই, সংস্কৃতির শিকড়ে ফিরে যাই।