রায়ান কুক, অ্যাশওয়েল প্রিন্স-সবাই তাকে ছেড়ে গেছে। এবার বাংলার ক্রিকেটের কোচিং প্যানেলে সাউথ আফ্রিকার ঝাণ্ডাবাহী হয়ে আছেন কেবল তিনি একা। আর সেই একা থাকা মানুষটা, যাকে এক কথায় বলা যায় নিঃসঙ্গ শেরপা। তিনি হলেন রাসেল ডমিঙ্গো।
এখন ক্রিকেটপাড়ায় অপেক্ষা, তিনি যাচ্ছেন কবে? এই প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি পারবেন তো টিকে থাকতে, নাকি তাকেও এবার বাড়ি থেকেই বাড়ি ফেরার পথ ধরতে হবে?
সময়ের কাঁটায় অনিবার্য বিষয়টাও কেমন যেনো অহেতুক মনে হয়, বিসিবির বেলাতেও এখন তাই ঘটছে। জিম্বাবুয়েতে সিরিজ জয়ের পর যে রাসেল ডমিঙ্গো, অ্যাশওয়েল প্রিন্স, ওটিস গিবসনদের খুব জরুরি মনে হয়েছিলো সেই তাদেরকেই কোনো এক দৈব কারণে হঠাৎ বিসিবি গলার কাঁটা মনে করছে?
তাও ভালো অনেকটা সময়ের বারোটা বাজিয়ে হলেও বিসিবির সুমতি ফিরছে, বাঁকা আঙুলটাও হচ্ছে সোজা। সাউথ আফ্রিকান রায়ান কুকের বিদায়ের পর, অ্যাশওয়েল প্রিন্সের ঘণ্টাও বেজে গেছে, এইচপির কোচ হওয়ার প্রস্তাব পেয়ে মান সম্মান রক্ষা কমিটির আওতায় তিনি চাকরি ছেড়েছেন।
সবমিলিয়ে সাউথ আফ্রিকান বলতে, কিংবা পুরনো কোচিং প্যানেলের একাই টিকে রইলেন রাসেল ডমিঙ্গো। মাশরাফী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আমলেই বেশ আক্ষেপ নিয়ে বলেছিলেন, চাকরি না পাওয়া সাউথ আফ্রিকানদের রিহ্যাব সেন্টার বনে গেছে জাতীয় দলে কোচিং প্যানেল।
তাদের ভূমিকা নিয়ে মাশরাফীর ছিলো বিস্তর প্রশ্ন; তার দাবি মতে জাতীয় দলের সাউথ আফ্রিকান অংশ ছিলো অনেকটা পরিবার তন্ত্রের মতো, খাম খেয়ালিতে ভরা। যদিও এই কথায় তখনও বিসিবির টনক নড়েনি, চারিদিক ছিলো খাম খেয়ালিতে ভরা।
এবার বহু কারণে আলোচিত, চওড়া হাসিতে চিবুক ভাসানো রাসেল ডমিঙ্গোর পালা, শেষ কমরেড প্রিন্সের বিদায়ের পর তিনি যেনো এখন বাংলার ক্রিকেটে সাউথ আফ্রিকান পতাকা ওড়ানো একমাত্র নাবিক, নেতিবাচক চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা নিঃসঙ্গ শেরপা।
সসম্মানে বিদায়ের যে তরিকা ক্রিকেটপাড়ায় আছে, আছে যেটুকু সৌজন্য তার পুরোটা মাথা না খেয়ে কী বিদায় নেবেন না ডমিঙ্গো? অর্থের জন্য তিনি কী সব অনর্থে জড়াতেও রাজি এমন প্রশ্নও উঠছে।
কারণ বিশ্বকাপে এমন ভরাডুবির পরই অনেকে ভেবেছিলেন ডমিঙ্গো সরে দাঁড়াবেন, কোচিংয়ের তরিকা তেমনটাই বলে। তবে নিজেকে চরম ও ভয়ংকর সফল মনে করা ডমিঙ্গো যেনো খুরকুটো ধরেই বাঁচার চেষ্টা করছেন, চাকরিটাকেই করে ফেলেছেন জীবনের একমাত্র ব্রত, সম্মান যেখানে কেবল ছাই।