প্রতিবেশী রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের অবিলম্বে দেশটি ছাড়ার ‘পরামর্শ’ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পোল্যান্ডের ওয়ারশতে বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, প্রবাসীরা অন্য কোনো দেশে যেতে না পারলে তারা বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন।
ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে দূতাবাসের পক্ষ থেকে পরামর্শ হালনাগাদ করা হবে। যদিও ওয়ারশতে বাংলাদেশি দূতাবাস নামের যে ফেসবুক পেজ থেকে এই বার্তাটি দেওয়া হয়েছে, সেটি ভেরিফাইড করা না।
পেজটিতে দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশিদের অত্যাবশ্যকীয় না হলে ইউক্রেন ভ্রমণ পরিহার করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা তাদের অবস্থানের তথ্য দূতাবাসকে অবহিত রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো, যাতে করে জরুরি প্রয়োজনে দূতাবাস তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
এদিকে মহড়া শেষ করে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে গেছে ইউক্রেনের সীমান্তসংলগ্ন কয়েকটি জেলার রুশ সেনারা। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এমন খবর দিয়েছে।
রুশ সামরিক বাহিনীর এই পদক্ষেপ পশ্চিমাদের সঙ্গে দেশটির বিরোধ কমিয়ে আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনলাইনে প্রকাশিত এক ভিডিওতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, দেশজুড়ে বড় ধরনের সামরিক মহড়া অব্যাহত থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলীয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় কয়েকটি জেলা থেকে কয়েকটি ইউনিটকে ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মহড়া শেষ করে তারা ঘাঁটিতে ফিরতে শুরু করেছেন।
ভিডিওতে দেখা গেছে, রেলওয়ের ফ্ল্যাটওয়াগনে কয়েকটি ট্যাংকসহ সাঁজোয়া যানগুলো ওঠানো হচ্ছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেভা বলেন, রাশিয়ার সব সেনা প্রত্যাহারে করে নিয়ে যাওয়ার পরেই উত্তেজনা প্রশমনে বিশ্বাস করবে কিয়েভ। রুশ ফেডারেশনের কাছ থেকে আমরা অব্যাহতভাবে বিভিন্ন বিবৃতি শুনতে পাচ্ছি। কাজেই আমাদের একটি নীতি আছে। যা আমরা দেখছি, তাতেই বিশ্বাস করছি।
তিনি জানান, যখন দেখবো—তারা সেনাপ্রত্যাহার করে নিয়ে যাচ্ছে, তখনই কেবল উত্তেজনা প্রশমন করা হচ্ছে বলে মনে করব।
এদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে চলা অচলাবস্থা অবসানে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও আলোচনার কথা বলায় ও যুদ্ধ এড়াতে কিয়েভের কর্মকর্তাদের ছাড়ের ইঙ্গিত মেলায় সেই সংকটের সুরে খানিকটা পরিবর্তন এসেছে।
রুশ যুদ্ধজাহাজগুলো কৃষ্ণ সাগরের ইউক্রেন উপকূলে জড়ো হলেও রাশিয়ার স্থল বাহিনীগুলো আঘাত হানতে প্রস্তুত দেখা গেলেও সোমবার পরিস্থিতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
অবিলম্বে সামরিক পদক্ষেপ শুরু করার পরিবর্তে ক্রেমলিন পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আরও আলোচনা চায় বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার আলোচনার প্রসঙ্গে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, আমার বিশ্বাস আমাদের সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। আমি সেগুলো চালিয়ে নেওয়ার ও তা আরও জোরদার করার প্রস্তাব করছি।
সামরিক পদক্ষেপ ছাড়াই সেনা সমাবেশকে ব্যবহার করে মূল উদ্দেশ্যগুলো অর্জন করতে পারবে বলে ক্রেমলিন এখনও সে সম্ভাবনার কথাই ভাবছে।
ইউক্রেইনের রাজধানী কিয়েভেও এমন সুর বদলের সম্ভাবনা জোরদার হচ্ছিল। সেখানে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা খোলা রেখেছেন। তিনি এমন পদক্ষেপের দিকে এগোলে তা পুতিনের অন্যতম প্রধান দাবি পূরণে সহায়তা করবে।