আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি চলছে। সোমবারের (২১ ফেব্রুয়ারি) শুনানিতে প্রাথমিক আপত্তি উত্থাপন করছেন মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা।
২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গণহত্যা, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ধরপাকড় চালিয়েছে। খবরে বলা হয়, রাজ্যটিতে গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে তাতমাদো নামের সেনাবাহিনী। এতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
এমন এক সময় শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যার বছরখানেক আগে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানে গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্মম ধরপাকড় চালানো হয়েছে।
ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে গাম্বিয়া রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলাটি দাখিল করেছিল। জাতিসংঘের এক তদন্তে বলা হয়েছে, গণহত্যার উদ্দেশ্যে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে সামরিক বাহিনী। এতে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লিয়াংসহ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার সুপারিশ করা হয়েছে।
২০১৯ সালে মিয়ানমারের সমর্থনে দ্য হেগ শহরে সফরে গিয়েছিলেন তখনকার বেসামরিক নেতা অং সান সুচি। কিন্তু গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বলছে, আদালতের প্রাথমিক আপত্তির শুনানিতে যুক্তি তুলে ধরবেন তাদের প্রতিনিধিরা। যদিও ক্ষমতাচ্যুত হওয়া জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) গত সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েছে, মামলায় তাদের আপত্তি তুলে নেওয়া হয়েছে। আইসিজে মামলাটি এগিয়ে নিতে পারে।
এক ব্রিফিংয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়ার্চ ও গ্লোবাল জাস্টিস সেন্টার বলেছে, শুনানিতে সামরিক অংশগ্রহণের সঙ্গে তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। আইসিজের বিধিতে, আদালতে কোনো দেশের কোনো স্থায়ী প্রতিনিধি নেই।
মিয়ানমারের প্রাথমিক আপত্তি এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু এর সঙ্গে গাম্বিয়ার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা কিংবা তা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আওতাধীন কি না, তা নিয়ে বক্তব্য থাকতে পারে।