খালেদা জিয়াকে আটক রাখা বা ছেড়ে দেওয়ার এখতিয়ার সরকারের নেই। বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত আসামি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, তারেক রহমানও সন্ত্রাস ও দুর্নীতির দায়ে আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। দুর্নীতি তাদের অস্থিমজ্জায়।
শুক্রবার (৪ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এসময় দুর্নীতিকে বৈধতা দিতে বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছে। দুর্নীতির রাজত্ব ও রাজনীতি কায়েম করতে গিয়ে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের বক্তব্য পরিকল্পিতভাবে লাগাতার মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি বারবার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এ জন্য দেশের মানুষ তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, তারা নাকি বিভাজনের রাজনীতি করে না! বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য ভুতের মুখে রাম রাম ধ্বনি ছাড়া কিছু নয়। এ দেশের রাজনীতিতে বিএনপিই বিভাজন রেখা ও ঐক্যের সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। সাম্প্রদায়িক বিভেদ-বিদ্বেষ সৃষ্টি এবং রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহারের অপসংস্কৃতির ধারক ও বাহক হলো বিএনপি।
তিনি বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতন যাদের অস্থিমজ্জায়, দুর্নীতি আর লুটপাট যাদের রাজনীতি তারা যতই চটকদার কথা বলুক না কেন জনগণ এখন আর তাদের এসব অপকৌশলে আস্থা রাখে না। স্বৈরশাসন, অপপ্রচার, গুজব, মিথ্যাচার, দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও ধর্মান্ধতা নির্ভর রাজনীতির কারণে জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, চরম হতাশায় নিমজ্জিত বিএনপি নেতারা লাগাতারভাবে অসংলগ্ন, অবাস্তব ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করে চলেছে। দেশের অভ্যন্তরে নানামুখী অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ও ধ্বংসাত্মক অপতৎপরতা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশ ও জনগণবিরোধী ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা এখন উদ্ভ্রান্ত পথিকের মতো প্রলাপ বকতে শুরু করেছে। ক্ষমতার তৃষ্ণায় কাতর নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে মঞ্চ গরম করা বক্তব্য দেওয়া বিএনপি নেতারা ভালোভাবেই জানেন তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। প্রত্যুষেই ঝরে পড়বে ষড়যন্ত্রের অন্ধকারে বোনা তাদের আকাঙ্ক্ষার সব স্বপ্নকলি।
তিনি বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি, পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে তাদের সমাবেশ স্থল ছিল জনশূন্য। জনগণের সাড়া না পেয়ে তারা অগ্নিসন্ত্রাসের পথ বেছে নেয়। তারা শত শত নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা এবং মানুষের বাড়ি-ঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করে। অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে দেশের জনগণ। তারা জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সৎ সাহস হারিয়ে ফেলেছে।
বিএনপি ঐক্যের রাজনীতি করে দলটির এমন দাবির জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ জানতে চায় এ ঐক্য কাদের সঙ্গে? কীসের ঐক্য? বিএনপির ঐক্যের রাজনীতি তো দেশদ্রোহী-জাতিদ্রোহী স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে। তাদের ঐক্য সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ ও জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে। তাদের তথাকথিত ঐক্যের মূলে দেশবিরোধিতা আর উন্নয়ন বিমুখতা। তারা ঐক্য করে স্বার্থসিদ্ধি ও লুটপাটের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য। তাদের দুঃশাসন ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ইতিহাস তারই সাক্ষ্য বহন করে।