স্তব্ধ, হতাশ, হতবাক। কিংবদন্তির অকাল প্রয়াণে যেন শূন্যতা ভর করেছে সর্বত্র। চলছে শোকের মিছিল। মাঠের শেন ওয়ার্ন যতটা ভয়ংকর, মাঠের বাইরে ছিলেন ততই বন্ধুসুলভ। তাইতো এই লেগিতেই স্তুতি ঝরলো বাংলার কিংবদন্তি স্পিনার রফিকের কণ্ঠে। বন্ধুকে হারিয়ে শোকে আচ্ছন্ন আতহার আলী খানও। ওয়ার্নের অকাল প্রয়াণে শোক জানিয়েছেন লাল সবুজের সাবেক ক্রিকেটারাও।
স্তব্ধ চারপাশ, চোখ ঝাপসা। তবুও স্মৃতির মণিকোঠায় যেন যত্ন করে রাখা অমূল্য ধন। লেগস্পিনের কিংবদন্তি। ক্রিকেটের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। কিন্তু আচমকাই থেমে গেল সেই সুর।
ভিক্টোরিয়ার ফার্নট্রি গালি থেকে থাইল্যান্ডের কোহ সামুই। মাঝের ৫২ বছরের পুরোটা সময় এক মোহে আচ্ছন্ন ছিলো তাবদ দুনিয়া। ওয়ার্নের প্রায়ণে শেষ হলো একটা অধ্যায়। যে অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল বাংলার ক্রিকেটও।
শোকের আবহাওয়া ছিল দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও। বিসিবি আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৪ টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওয়ার্নের স্মরণে করা হয় নিরবতা পালন। জাদুকরের মৃত্যুতে কষ্টগুলোর বুকে চেপে রেখেছেন বাংলার সাবেকরা।
স্মৃতি রোমন্থন করে ওয়ার্নার প্রসঙ্গে আতহার আলী খান বলেন, সব সময় ওয়ার্নার বলতো ক্রিকেটে বাংলাদেশের ভবিষ্যত ভালো। কোন সময় কোন নতুন খেলোয়াড় বাংলাদেশ দল এলো, কার পারফরম্যান্স কেমন, কার কেমন উন্নতি এসব নিয়েও সে আমার সঙ্গে কথা বলত। সে সব সময় বলতো বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের যে কোনো প্রতিপক্ষকে গুড়িয়ে দেওয়ার যথেষ্ঠ সামর্থ্য আছে।
১৯৯৯ বিশ্বকাপে প্রথমবার শেষ ওয়ার্নের মুখোমুখি হয় বাংলার ব্যাটাররা। শেষবার ২০০৬ সালে। প্রতিটি ম্যাচেই এই লেগিকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন মোহাম্মদ রফিক। তার কাছে অন্যদের চেয়েও ওয়ার্ন এগিয়ে যোজন যোজন।
ওয়ার্নারের আস্মিক মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন বাংলাদেশের সাবেক লেগ স্পিনার রফিক বলেন, ‘ আমার কাছে ক্রিকেটের ম্যারাডোনা শেন ওয়ার্ন। তার সঙ্গে মাঠে অনেকবার খেলেছি। তবে মাঠের শেন ওয়ার্ন ও বাইরের শেন ওয়ার্নের মধ্যে বেশ তফাৎ।’
অন্যদিকে শেন ওয়ার্নের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ব্যাটার হান্নান সরকারের মাঠে খেলার সুযোগ না হলেও, মাঠের বাইরে আড্ডা দেওয়া সৌভাগ্য হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এমন একজন মানুষ এত অল্প সময়ে হারিয়ে যাবে কল্পনা করতে পারিনি। তার সঙ্গে আমার কিছু সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছে। তবে খেলার সুযোগ হয়নি। মাঠের বাইরে সে চমৎকার একজন মজার মানুষ।’
মৃত্যু হয়তো একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটিয়েছে সত্যি, তবে যতদিন ক্রিকেট থাকবে, লর্ডস থেকে গ্যাবা, মুম্বাই থেকে ফতুল্লা। শেন ওয়ার্ন আছেন, শেন ওয়ার্ন থাকবেন। কিংবদন্তিদের যে বিদায় নেই!