মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন আমেরিকার পরিবারগুলোতে আঘাত করতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে গ্যাস ও তেলের দাম বেড়ে গেছে।
রাশিয়ার তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সিদ্ধান্তের খেসারত যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে হবে বলেও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আজ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে নিজেদের দেশেও খেসারত দিতে হবে আমাদের। পুতিনের যুদ্ধ গ্যাস উত্তোলনে আমেরিকার পরিবারগুলোতে আঘাত করতে শুরু করেছে। ইউক্রেন সীমান্তে রুশ প্রেসিডেন্ট সামরিক জমায়েত শুরু করার পর থেকে আমেরিকায় গ্যাসের দাম ৭৫ সেন্ট বেড়েছে। তার পদক্ষেপ যত জোরালো হচ্ছে, আমাদের কষ্টও বাড়ছে তত।
তিনি বলেন, এখানে পুতিনের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি কমিয়ে আনতে যা করা সম্ভব, আমরা তা-ই করব। আমেরিকার তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোকে উদ্দেশ্য করে বাইডেন বলেন, যুদ্ধ ও তার প্রভাবকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে দেশে কোনোভাবেই মূল্য বাড়ানো যাবে না। কারণ তাতে আমেরিকার ভোক্তাদের শোষণ করা হবে, আমরা তা সহ্য করব না।
সবাইকে রুশ আগ্রাসনের খেসারত দিতে হচ্ছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, সময়টি মোটেও অতিরিক্ত লাভ কিংবা মূল্যবৃদ্ধির না। এ রকম কিছু করা হলে আমরা সহ্য করব না বলে পরিষ্কার বলে দিচ্ছি। এখন নিজেদের দায়িত্ব পালনের সময় হয়েছে আমাদের।
এদিকে ইউক্রেনের সুমি শহরে আঘাত হেনেছে রাশিয়ার ৫০০ কেজি ওজনের একটি বড় বোমা। এতে দুটি শিশুসহ ২১ জন নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলের ভিডিওতে হামলা পরবর্তী সময়ের বিভৎসতা দেখা গেছে। পাথরে রক্তের ছোপ আর ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ তুলে আনা হচ্ছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মানুষের নিথর দেহ পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা মানুষের সহায়তায় দৌড়াদৌড়ি করছেন। ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ বলছে, গত রাতে রাশিয়ার বিমানের পাইলট আরেকটি মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। তারা একটি আবাসিক ভবনে ৫০০ কেজি ওজনের বোমা মেরেছে।
সুমি আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসনের প্রধান দিমিত্র জিভিটসকি বলেন, তারা শিশুদের হত্যা করছে। কোনো মানুষই তাদের বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। তাদের কোনোদিন ক্ষমা করা হবে না।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন ছেড়ে লাখ লাখ নাগরিক প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে যাচ্ছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, এ পর্যন্ত ২০ লাখ লোক ইউক্রেন ছেড়েছেন। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এমন তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রধান ফিলিপো গ্রান্ডি।
এর আগে তিনি বলেন, কিয়েভ-মস্কোর চলমান যুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি ও দ্রুত সময়ে শরণার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে।