বিভাগীয় পর্যায়ে স্টার্টআপদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে দেশব্যাপী কাজ শুরু করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) আওতায় ‘উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (আইডিয়া) প্রকল্প’। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১২ মার্চ) বরিশালে তিনদিনব্যাপী “স্টার্টআপ আইডিয়েশন ইনকিউবেশন প্রোগ্রাম” আয়োজন শুরু হয়েছে। এতে “স্টার্টআপ বরিশাল” এর সহযোগিতায় বরিশাল এবং তার পার্শ্ববর্তী জেলার নির্বাচিত ৪০টি স্টার্টআপের ৮০ জন তরুণ বিনামূল্যে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়।
আইডিয়া প্রকল্পের উদ্যোগে এবং “স্টার্টআপ বরিশাল” এর সহযোগিতায় বরিশালের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (এইচএসটিটিআই) স্টার্টআপটি আগামী ১৪ মার্চ পর্যন্ত চলবে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে এই স্টার্টআপ ইনকিউবেশন প্রোগ্রামটির শুভ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের বিসিসি-এর নির্বাহী পরিচালক (গ্রেড-১) ড. মো. আব্দুল মান্নান পিএএ।
তিনি বলেন, যে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আইডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে স্টার্টআপদের কল্যাণে কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ আয়োজনের মাধ্যমে বরিশাল বিভাগের উদ্যোক্তাগণ অনুপ্রাণিত হবেন বলেও তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
তিনি বরিশাল জেলা প্রশাসন, স্টার্টআপ বরিশালসহ সকলকে এ ধরনের আয়োজনে সহোযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) খোন্দকার আনোয়ার হোসেন এবং আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্মসচিব মো. আলতাফ হোসেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দীন হায়দার। অনুষ্ঠানে স্বাগত দেন আইডিয়া প্রকল্পের জেষ্ঠ্য পরামর্শক আর. এইচ. এম. আলাওল কবির।
বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) খোন্দকার আনোয়ার হোসেন বলেন, যে আমাদের চিন্তা শক্তি ও প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে আমরা আমাদের দেশকে স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব। বরিশালের যেসব উদ্যোক্তা রয়েছে তাদের সর্বোচ্চ সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলেও তিনি জানান।
আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্মসচিব মো. আলতাফ হোসেন বলেন, যে আইসিটি খাতে সরকারের অবদান অনস্বীকার্য। ইতোমধ্যে ৪০০ এর বেশি স্টার্টআপ নিয়ে বিভিন্নভাবে আইডিয়া প্রকল্প কাজ করছে। তিনি স্টার্টআপদেরকে সরকারের এসকল সুযোগগুলো কাজে লাগাতে উৎসাহিত করেন।
বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দীন হায়দার তার বক্তব্যে বলেন, যে আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং উদ্ভাবনী মনোভাবই পারে আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আমরাও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে উন্নত দেশের তালিকায় স্থান করে নিতে পারব।
স্টার্টআপের সফল বাস্তবায়ন, উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন আইনি সমস্যাসহ স্টার্টআপ সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানের উপায় নিয়ে এ ইনকিউবেশন প্রোগ্রামে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকছে বিশেষ সেশন। এছাড়া স্টার্টআপদের আর্থিক কৌশল ও বিশ্লেষণ, ব্যবসায়িক মডেল, মার্কেটিং ও বিক্রয় কৌশলসহ নানা টপিক এ স্টার্টআপ ইনকিউবেশন প্রোগ্রামে প্রশিক্ষণের বিষয় হিসেবে প্রাধান্য পাবে।
ময়মনসিংহ ও কুমিল্লাতে আয়োজনের পর এবার বরিশাল অঞ্চলেও প্রোগ্রামটি সফলভাবে সম্পন্ন হবে বলে মনে করছেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ। এ প্রশিক্ষণের মধ্য থেকে শীর্ষ স্টার্টআপগুলো ‘আইডিয়া’ প্রকল্প হতে ১০ লক্ষ টাকা অনুদানের জন্য আবেদন করবেন। এক্ষেত্রে অনুদান প্রদানের জন্য ‘আইডিয়া’ প্রকল্পের প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করা হবে। সবশেষে, ‘আইডিয়া’ প্রকল্পের ‘সিলেকশন কমিটি’ কর্তৃক চূড়ান্তভাবে যোগ্য বিবেচিত স্টার্টআপ ১০ লক্ষ টাকা অনুদান গ্রহণের সুযোগ পাবেন।
উল্লেখ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের তত্ত্বাবধানে আইসিটি বিভাগ স্টার্টআপদের জন্য গ্রহণ করেছে নানা উদ্যোগ। আইডিয়া প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সাল থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত ২৪৮টি স্টার্টআপকে ১০ লাখ টাকা করে অনুদান প্রদানের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
আইডিয়া প্রকল্প সারাবছরই স্টার্টআপদের অনুদান প্রদানের লক্ষ্যে আবেদন গ্রহণ করে থাকে। তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক যেকোন উদ্ভাবনী আইডিয়া নিয়ে অনুদানের জন্য আবেদন করতে www.idea.gov.bd ভিজিট করতে হবে।