যাত্রাপথের মাঝামাঝি মাঝ আকাশ থেকে আছড়ে পড়ে বিধ্বস্ত হয় চীনের চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনসের সেভেন থ্রি সেভেন বিমান।
এভাবে কোনো বিমানের হঠাৎ করে মাঝ আকাশ থেকে পতনের ঘটনা অনেকটাই বিরল। বিষয়টিকে অস্বাভাবিক মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে তাই তৈরি হচ্ছে রহস্যের।
দুপুর বেলা প্রচণ্ড শব্দে অবাক হন গুয়াংশি অঞ্চলের টেং কাউন্টির বাসিন্দারা। শব্দ বলতে পাখির কলকাকলি আর গ্রামের রাস্তায় চলা মোটরবাইকের ইঞ্জিনের গর্জনের সঙ্গেই পরিচিত পাহাড় আর অরণ্যে ঘেরা এই জনপদের বাসিন্দারা।
সোমবার দুপুর ১টা ১১ মিনিটে কুনমিং প্রদেশের রাজধানী ইউনান থেকে টেকঅফ করে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমইউ ৫৭৩৫। গুয়াংজুর দিকে যাওয়ার পথে গুয়াংশির আকাশে ২৯ হাজার ১০০ ফুট উচ্চতায় ছিল বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের প্লেনটি।
ফ্লাইটরাডার ২৪ বলছে, দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি হঠাৎ করেই খাড়াভাবে নিচের দিকে নামতে থাকে। ২৯ হাজার ১০০ ফুট থেকে নেমে আসে ৩ হাজার ২২৫ ফুট উচ্চতায়। মিনিটে ৩০ হাজার ফুট গতিতে উচ্চতা হারাতে থাকে বিমানটি।
৪০ সেকেন্ড একটানা নিচের দিকে পড়ার পর ১০ সেকেন্ডের জন্য নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় বিমানটি। এরপর ফের নোজডাইভ দিয়ে আছড়ে পড়ে টেং কাউন্টির জঙ্গলে আবৃত দুর্গম পাহাড়ে।
হঠাৎ করেই বিমানটির মাঝ আকাশ থেকে মাটির দিকে নোজডাইভ দেওয়াকে অস্বাভাবিক মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে মাত্র আড়াই মিনিটে ২৯ হাজার ফুট উচ্চতা হারানোর বিষয়টি রহস্যজনক। মাঝ আকাশে বিমানটিতে অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা ঘটেছিল কি না, এমন সন্দেহ তাদের।
এমনিতেই এভিয়েশন সেফটির ব্যাপারে অনেক কঠোর চীনের সরকার। দেশটির এয়ার সেফটি রেকর্ডও অনেক ভালো। চীনে সর্বশেষ প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছিল ২০১০ সালে। নিরাপদ বিমান সংস্থা হিসেবে সুনাম আছে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনসেরও। সবশেষ ২০০৪ সালে দুর্ঘটনায় পড়েছিল এর বিমান।
বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির সেফটি রেকর্ডও ছিল ভালো। ২০১৫ সালে চায়না ইস্টার্ন-এর বহরে যোগ দেয় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটি। এই মডেল বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত যাত্রীবাহী বিমান। বিশ্বের ২৫ হাজার যাত্রীবাহী বিমানের ১৭ শতাংশই এই মডেলের।